• মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ১ ১৪৩১

  • || ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

এবার বন্যার ঝুঁকিতে উত্তর-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চল

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০২৪  

ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দেওয়ায় রাজশাহীর পদ্মাসহ দেশের নদ-নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। পদ্মায় প্রতি তিন ঘণ্টায় ১ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। সোমবার ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খোলার কথা বলা হলেও রবিবার থেকেই পানি বাড়ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উত্তরাঞ্চলীয় পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগ। তবে, সোমবার ভারতের ফারাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, খুব কম সময়ের মধ্যে পানির চাপ তৈরি হয়েছে। এর ফলে ১০৯টি গেটের সব কটি খুলে না দিলে বাঁধের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। তাই ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। এদিকে, পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগের তথ্যমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাংখা এলাকা দিয়ে ভারতের গঙ্গা নদী পদ্মা নাম ধারণ করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই পয়েন্টে সর্বশেষ সোমবার ভোর ৬টা ও সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা পাওয়া গেছে ২০ দশমিক ৪৮ মিটার। বিকেল ৩টায় তা হয় ২০ দশমিক ৫০ মিটার। পাংশায় পদ্মার পানির বিপৎসীমা ২২ দশমিক ৫ মিটার। পাংশার ভাটিতে রাজশাহী নগরের বড়কুঠি পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৮ দশমিক ৫ মিটার। সোমবার ভোর ৬টায় এখানে পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ২৭ মিটার। সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা আরও এক সেন্টিমিটার বেশি পাওয়া যায়। বিকেল ৩টায় পানির উচ্চতা পাওয়া যায় ১৬ দশমিক ৩০ মিটার। বড়কুঠির আরও ভাটিতে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সারদায় পদ্মার পানি বিপৎসীমার ১৬ দশমিক ৯২ মিটার। সোমবার সকাল ৬টায় এখানে পানির উচ্চতা ১৫ দশমিক ৫ মিটার এবং সকাল ৯টা ও বিকেল ৩টায় পানির উচ্চতা পাওয়া গেছে ১৫ দশমিক ৬ মিটার। এখন রাজশাহীর বড়কুঠি পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ৭৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পদ্মার অন্যতম প্রধান শাখা নদী চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দায় সোমবার সকাল ৬টা ও সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা পাওয়া গেছে ১৮ দশমিক ৪৭ মিটার। বিকেল ৩টায় পানি বেড়ে হয় ১৮ দশমিক ৪৯ মিটার। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পয়েন্টে মহানন্দা নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ মিটার। রাজশাহী অঞ্চলের নদীগুলোর মধ্যে আত্রাই, শিব, বারণই ও পুনর্ভবা নদীর পানিও এখন বিপৎসীমার কিছুটা নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে, পদ্মার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব নদীর পানি বৃদ্ধির শঙ্কা রয়েছে। নদীগুলোর দিকে সার্বক্ষণিক নজর রাখছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। উত্তরাঞ্চলীয় পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে ফারাক্কা বাঁধের গেট খোলার ব্যাপারে আমাদের কিছু জানায়নি। আমাদের জানাতে হবে এ রকম কোনো চুক্তিও নেই। তবে, আমরা দেখে আসছি, প্রতি বছরের ১ জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বাঁধের গেট খোলা রাখা হয়। তিনি বলেন, আমরা সাধারণত ১০ দিনের জন্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিই। আমরা এখনো মনে করি, আগামী ১০ দিনের মধ্যে পদ্মাসহ অন্যান্য নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে না। তারপরও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না পানি বাড়ছে বলে। এদিকে, ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায় বন্যার ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা। প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নদ-নদী বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভারাইন পিপলের পরিচালক এম আনোয়ার হোসেন। সোমবার ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে এ আশঙ্কার কথা জানান তিনি।

দৈনিক জামালপুর