• মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ১ ১৪৩১

  • || ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি আহত ঢাকায়, সর্বোচ্চ মৃত্যু কোথায়

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সারাদেশে সংঘাত-সহিংসতায় ১৮ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে বলে সরকার গঠিত কমিটির খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে ৬২২। মৃত্যুর এই সংখ্যা হাসপাতাল থেকে নেয়া। গত ৫ সেপ্টেম্বর এ প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এটি একটি প্রাথমিক বা খসড়া তালিকা। এখন তথ্য-উপাত্ত শুদ্ধ করার কাজ চলছে। এই তালিকা ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত করা হবে। তখন আরো কিছু নাম যোগ হতে পারে। মৃত্যুর সংখ্যাতেও পরিবর্তন আসবে। সরকারি হিসেবে আন্দোলনে এ পর্যন্ত আহতের সংখ্যা ১৮ হাজার ২৪৭। ৮ বিভাগের মধ্যে ঢাকা বিভাগেই সবচেয়ে বেশি ১১ হাজার ৭৩ জন আহত হয়েছে। আর সবচেয়ে কম ২৩৬ জন আহত হয়েছে বরিশাল বিভাগে। অভ্যুত্থানে সারাদেশে ১৮ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা ৬২২। ঢাকার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭৩৮ জন আহত হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। এরপর খুলনা বিভাগে ১ হাজার ৫৪৬ জন। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে যথাক্রমে ১ হাজার ২০৫ জন ও ১ হাজার ১৫৪ জন। সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে যথাক্রমে ৭১৮ ও ৫৭৭ জন। আন্দোলনে আহত ও নিহতের তালিকা তৈরি করছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস)। এমআইএসের তথ্যে দেখা গেছে, আহতদের মধ্যে ১০ হাজার ৯৩৯ জন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে। আর হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছে ৬ হাজার ৮৬৫ জন। হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনযায়ী আহত মানুষের বেশির ভাগ চিকিৎসা নিয়েছে সরকারি হাসপাতালে। ১৮ হাজার ২৪৭ জনের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ১৫ হাজার ৬৮৯ জন এবং বেসরকারি হাসপাতালে ২ হাজার ৫৫৮ জন। ঢাকা বিভাগেই সবচেয়ে বেশি ১১ হাজার ৭৩ জন আহত হয়েছে। আর সবচেয়ে কম ২৩৬ জন আহত হয়েছে বরিশাল বিভাগে। মৃত্যুর তালিকায় দেখা গেছে, আন্দোলনের সময় সব বিভাগেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে মারা গেছে ৪৭৭ জন। সবচেয়ে কম মারা গেছে বরিশাল বিভাগে, একজন। চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে মারা গেছে যথাক্রমে ৪৩ ও ৩৯ জন। সিলেট, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ জেলায় মারা গেছে যথাক্রমে ২২, ১৯ ও ১৭ জন। এই আন্দোলনে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে রংপুরে। এই বিভাগে সহিংসতায় মারা যায় ৪ জন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, আমরা হাসপাতাল সূত্রের বাইরে অন্য সূত্র থেকে মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা বের করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। মৃত্যুর ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সহিংস ঘটনার পর ৪৪৩ জনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। বাকি ১৭৯ জনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে মারা গেছে ৪৭৭ জন। সবচেয়ে কম মারা গেছে বরিশাল বিভাগে, একজন। এই আন্দোলনে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে রংপুরে। এই বিভাগে সহিংসতায় মারা যায় ৪ জন। আন্দোলনের শুরুর দিকে পুলিশের ছররা গুলিতে বহু মানুষের চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে ৩ হাজার ৪৮ জনের আঘাত বা জখম ছিল গুরুতর। এদের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। তবে অস্ত্রোপচার ও সব ধরনের চিকিৎসা শেষে কম-বেশি শারীরিকভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন অন্তত ৫২৫ জন। এমআইএসের হিসাবে দেখা গেছে, চোখে গুরুতর আঘাত পাওয়া মানুষের সংখ্যা ৬৪৭। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ৬০৩ জন। দ্বিতীয় চট্টগ্রাম বিভাগে ২২ জন। বাকি ৬ বিভাগে চোখে গুরুতর আঘাত লাগা মানুষের সংখ্যা ২২। তাদের মধ্যে কেউ দুই চোখের, আবার কেউ এক চোখের দৃষ্টিশক্তি চিরদিনের জন্য হারাতে পারে।

দৈনিক জামালপুর